পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলা প্রসাশনের তদারকির অভাবে উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে লক-ডাউনে ঢিলেঢালা ভাব। ফলে ভাইরাস আক্রান্তের ব্যাপক সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
প্রকাশ,বর্তমানে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের অসংখ্য প্রভাবশালী ও উন্নত দেশে আজ করোনা ভাইরাস আতংকে আতংকিত।ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের বেশকটি দেশের নাগরিকদের মৃত্যুর মিছিল চলছে।পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে অই সব উন্নত দেশ গুলোকে। এটি বর্তমানে শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের সমস্যা। প্রথম পর্যায়ে গত বছরে আগত বিদেশী নাগরিকদের অবাধ বিচরনের ফলে বাংলাদেশে ৩৩ জন নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগি সনাক্ত হওয়া এবং ৪ জন রোগির মৃত্যু হওয়ায় সারাদেশে আতংক ছড়িয়ে পড়েছিল। এ সংখ্যা যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছিল। সে সময় সারাদেশ ব্যাপি সরকারি ভাবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা,সভা-সমাবেশ,পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদি,হোটেল-রেস্তরা,ছোট বড় বিনোদন কেন্দ্রসহ হাট-বাজার ইত্যাদি বন্ধসহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পাশাপাশি সরকারি কর্মচারি-কর্মকর্তদের নিদৃষ্ট গন্ডিতে থেকে স্ব,স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করতে বলা হয়েছিল। সরকারের সেই নির্দেশনায় জন-সাধারনের ব্যাপক সাড়াছিল,পাশাপাশী উপজেলা প্রসাশনের পক্ষে থেকে উপজেলা সদর ও পৌরসভা এলাকাকে লকডাউনসহ প্রায় দেড় শতাধিক বিদেশ ফেরত নারী-পুরুষকে হোম-কেয়ারেন্টাইনে রাখতে কঠোর ভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকার ঘোষিত এবারে করোনার ২য় ঢেউ মোকাবেলায় ৭দিন ব্যাপী সারাদেশের লক-ডাউনে পীরগঞ্জের হাট-বাজার গুলোতে তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি উপজেলা প্রসাশন।
সরেজমিনে উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে গিয়ে দেখা যায়-কোথাও কোন স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। হাটে আগত অনেক কেও্রতা বিক্রেতা জানায়-রাতের ১১-১২টা পর্যন্ত চলে হাটের অবাধে বেচাকেনা। এ ছাড়াও রাস্তায় রাস্তায় সিএনজি, অটো ভ্যান,রিক্সা, মাইক্রবাস ও যাত্রীবাহী বাসে অবাধে চলাচল করছে যাত্রী।যা দেখভাল ও তদারকিতে সক্রীয় ভাবে মাঠে নেই উপজেলা প্রসাশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি লক ডাউনের ২দিন পীরগঞ্জ সদর, চত্রাহাট, লালদিঘি বাজার ও পৌরসভাসহ হাইওয়েতে বেশকিছু ব্যবসায়ীসহ পথচারীদের সাধ্যমোতাবেক ভ্রাম্যমানে জরিমানা করেছি। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধি মানতে হাটে-বাজারে প্রচারনা চালিয়েছি। কিন্তু সচেনতার অভাবে সাধারন মানুষ এ সকল মানতেই চায় না। পীরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ সরেস চন্দ্র বলেন- আমরা পুলিশের পক্ষে নিয়মিত ভাবে লক-ডাউন ও স্বাস্থ্য বিধি মানতে কাজ করছি কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে চোর পুলিশের খেলা । উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি’র সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুহুল আমিন বুলেট বলেন- জন-সচেনতার বিকল্প কিছু নেই, বর্তমানে সারাদেশে যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এতে সাধারন মানুষ সচেনতাই সাড়া না দিলে অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারন করবে।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায়কে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে মিঠিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মেদ, চত্রা ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন মিয়া, বড়দড়গাহ ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল হক, মদনখাখি ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক ও ভেন্ডাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের সাথে কথা হলে তারা বলেন-গত বছরের লক-ডাউনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কমিশনার (ভূমি)’র ব্যাপক ভ্রাম্যমান পরিচালনাসহ পুলিশ প্রসাশনেরও ব্যাপক প্রচারনা লক্ষ্য করা গেছে কিন্তু এবারে লক-ডাউনের ১মদিনে শুধু উপজেলা সদরে নামমাত্র ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করা হলেও এখ নপর্যন্ত হাট-বাজার গুলোতে তেমন প্রসাশনিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে হাট-বাজার গুলোতে তেমন কোন প্রভাব পড়েনি লক-ডাউনের। এ অবস্থা চলতে থাকলে পীরগঞ্জের অবস্থা হবে ভয়াবহ।